বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা যে কোনো ধরনের পেশাগত সেবা দিতে গেলে “ভ্যাট” (মূল্য সংযোজন কর) এবং “টার্নওভার কর” নিয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখা জরুরি। অনেকেই ভাবেন এগুলো বুঝতে জটিল, কিন্তু সত্যি বলতে কি — একটু সহজ ভাষায় বললে বিষয়টা একদম ক্লিয়ার।
চলো তাহলে জেনে নেই বাংলাদেশে প্রচলিত ভ্যাট এবং টার্নওভার কর নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, একদম সহজভাবে।
ভ্যাট আদর্শ হার কত?
ভ্যাট মানে হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর, যা কোনো পণ্য বা সেবার চূড়ান্ত ভোক্তা প্রদান করে থাকেন। বাংলাদেশে ভ্যাটের আদর্শ হার হলো ১৫%। অর্থাৎ, বেশিরভাগ পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়।
তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার একেবারে শূন্য (০%):
- রপ্তানি পণ্য বা বিদেশগামী যানবাহনে সরবরাহকৃত খাদ্য বা অন্যান্য সামগ্রী।
- যেগুলো বাংলাদেশের বাইরে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সরবরাহ করা হয় (indirect export বা প্রচ্ছন্ন রপ্তানি)।
টার্নওভার কর হার: ৪%
এটি মূলত ছোট ও মাঝারি ব্যবসার জন্য নির্ধারিত, যাতে তারা সহজে ট্যাক্স দিতে পারে এবং ভ্যাটের ঝামেলা না পোহাতে হয়।
যেসব ব্যবসার বার্ষিক টার্নওভার ৩ কোটি টাকার কম — তারা চাইলে ভ্যাট নয়, টার্নওভার কর দিতে পারে।
তবে শর্ত আছে…
আইনের ধারা ৪(২) অনুযায়ী (সাধারণ আদেশ নং-১৭/মূসক/২০১৯, তারিখ: ১৭ জুলাই ২০১৯), কিছু প্রতিষ্ঠানকে টার্নওভার যতই হোক না কেন, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
তারা হলো:
- যেসব প্রতিষ্ঠান সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য বা সেবা প্রস্তুত, আমদানি বা সরবরাহ করে।
- যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টেন্ডার/চুক্তির ভিত্তিতে সেবা/পণ্য সরবরাহ করে।
- আমদানি বা রপ্তানিকারকরা।

ভ্যাটের রেট কি সব সময় ১৫%?
না! নিচে বিভিন্ন পণ্য/সেবার জন্য নির্ধারিত ভ্যাটের হারগুলো দেওয়া হলো:
সাধারণভাবে:
- ৫% / ৭.৫% / ১০% – নির্দিষ্ট কিছু পণ্য ও সেবা (তৃতীয় তফসিলে উল্লিখিত)
সেক্টরভিত্তিক:
- ঔষধের ক্ষেত্রে: উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ২.৪%
- পেট্রোলিয়াম পণ্য: ব্যবসায়ী পর্যায়ে ২% (মূল্যে অন্তর্ভুক্ত)
- পাইকারি বিক্রেতা (certified): ১.৫%
- ভূমি উন্নয়ন সংস্থা: ২%
- ভবন নির্মাণ:
- ১-১৬০০ বর্গফুট: ২%
- ১৬০০ বর্গফুটের বেশি: ৪.৫%
- পুনঃনিবন্ধন (যেকোনো সাইজ): ২%